হাজীদের নিয়ে সাগর পাড়ি দিয়ে চলছে পালে জাহাজ। সাগরেই কেটে যায় দিনের পর দিন, সপ্তাহের পর সপ্তাহ। কত ভয়ংকর ছিলো সে যুগের সমুদ্রযাত্রা, এখন তা কল্পনা করাও সম্ভব নয়। এককথায় সেটা ছিল প্রাণের মায়া ত্যাগ করে প্রাণদাতার মায়ায় আকুল হয়ে মৃত্যুর মুখে ঝাঁপ দেয়া। কিন্তু আল্লহর ঘরের আশিক যারা, আল্লাহর মুহাব্বাতের দিওয়ানা যারা জীবন মৃত্যুর পরোয়া না করে এভাবেই তারা সাগর পাড়ি দিতেন। একদিন সাগরে ঝড় উঠলো, পাহাড় সমান ঢেউ সৃষ্টি হলো, জাহাজ ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে গেল। মৃত্যু ছিল অবধারিত; এমন সময় এক ডুবন্ত যাত্রী মৃত্যুর ভয়ে নয়, বঞ্চনার ভয়ে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করে উঠলো- ‘তোমার ঘরের যিয়ারাতের আগে নয় হে আল্লাহ!’
এরপর, সে আর কিছু জানে না, যখন জ্ঞান ফিরে এলো তখন সে একা এক নির্জন দ্বীপে। তিন বছর পর গায়বি কুদরত তাকে পৌঁছে দিলো মক্কাভূমিতে, আল্লাহর ‘বাড়ীতে’। কীভাবে? তা লেখা নেই কিভাবে, আছে শুধু এ কথা, হজ্বের পর আবার সাগরপথে শুরু হলো তার সফর। যেখানে জাহাজ ডুবেছিলো সেখানে যখন এসে পৌছালো তখন সে জাহাজের কিনারে দাঁড়িয়ে অন্যদের দেখাতে লাগলো, এখানে, ঠিক এখানে ডুবেছিলো আমাদের জাহাজ। আর তখন… কেউ জানে না কীভাবে, সে পড়ে গেল জাহাজ থেকে। সাগরের পানিতে ডুবেই তার মৃত্যু হলো, তবে আল্লাহর ঘর যিয়ারাতের আগে নয়, পরে, যেমন সে ফরিয়াদ করেছিলো আল্লাহর দরবারে।
আল্লাহর বান্দাদের সঙ্গে এমনই হয় আল্লাহর আচরণ। মাথায় তোমার পাপের বোঝা! নিরাশ হয়ো না। চাওয়ার মত যদি চাইতে পারো তাহলে তুমি অনেক কিছু পেতে পারো। এ দুয়ার থেকে তো ডাক আসে দিন রাত, এসো হে নেককার, এসো হে গোনাহগার, লুটে নাও আমার দানের ভাণ্ডার।
উৎসঃ
বাইতুল্লাহর মুসাফির
আবু তাহের মিছবাহ
————————————————————————
বায়তুল্লাহ সফরের যে কোন সহযোগীতার জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করুনঃ ০১৯-৭২৭৭-২৩২৭